টাইটানিক জাহাজ আর একে নিয়ে তৈরি বিখ্যাত ছবি টাইটানিকের সাথে কম-বেশি আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, সাধারণ আর দশটা ঘটনার সাথে সাথে টাইটানিকের আছে কিছু অন্যরকম আর মজার তথ্য যেগুলো আপনি, আমি বা আরো অনেকেই জানেন না? জানতে চান সেগুলোকে? চলুন দেখে আসি একপলক।
১. অদ্ভূত মিল
বিখ্যাত হলিউডি চলচ্চিত্র টাইটানিক নিশ্চয় দেখেছেন? কেমন লেগেছে আপনার? কষ্ট পেয়েছেন নিশ্চয়? সত্যিই! মন খারাপ করে দেওয়া এই ছবিটিতে জ্যাকের ডুবে যাওয়ার সময়টাতে কি চোখের পানি আটকে রাখা যায়? কিন্তু না। এবার কাঁদতে নয়, আপনাকে অবাক করতে সাহায্য করবে এই টাইটানিক। ভাবছেন কি করে? কিন্তু এমনটা আর ভাবতেও পারবেন না যখন শুনবেন যে টাইটানিকের ডুবে যাওয়াটা আরো অনেক আগেই লিখে রেখেছিলেন কোন এক লেখক। বিশ্বাস হচ্ছে না?
ফিউটিলিটি অর দ্যা রেক অব দ্যা টাইটান- নামকরণে একটা বই লিখেছিলেন মর্গান রবার্ট তখন। যেটার বিষয়বস্তু ছিল না ডুবতে পারা এক জাহাজের ডুবে যাওয়া। বইটি প্রকাশিতও হয়েছিল। যার প্রচ্ছদে ছিল এক ডুবতে থাকা জাহাজের ছবি। কেমন দেখতে ছিল জাহাজটি অনুমান করুন তো? কাকতালীয় হলেও সেটা ছিল একদম আসল টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার সময়কার মতন দেখতে। জাহাজটির ছবি, এর ডুবে যাওয়ার ভঙ্গী দেখলে আপনি কেন, কারোরই বোঝার ক্ষমতা থাকেনা যে ওটা টাইটানিক নয়।
১৮৩৮ সালে প্রকাশিত করেন মর্গান তার বই। তাতে লেখেন পৃথিবীর সবচাইতে বড় এক জাহাজের কথা, যেটার মান ছিল প্রথম শ্রেণীর হোটেলের মতন এবং অবশ্যই ডুবে যাওয়ার ভয় থেকে পুরোপুরি মুক্ত। তে প্রচন্ড রকম মিল থাকলেও একটা জায়গায় এসে অমিল পাওয়ায় যায়। আর সেটা হচ্ছে জাহাজটি ডোবার জায়গা। মর্গানের লেখায় জাহাজটি ডুবেছিল একটি বরফের সাথে হওয়া সংঘর্ষ থেকে। নিউফাউন্ডল্যান্ড থেকে ৪০০ মাইল দূরে ২৫ নটে। আর সত্যিকারের টাইটানিক ডুবেছিল বরফের সাথে সংঘর্ষে, নিউফাউন্ডল্যান্ড থেকে ৪০০ মাইল দূরে ২২.৫ নটে!
বাস্তবের টাইটানিকের মতন মর্গানের জাহাজেও ছিল খুব অল্পসংখ্যক লাইফবোট। তবে তার গল্পে খুব একটা প্রভাব ছিল না সেগুলোর। কারণ খুব দ্রুতই জাহাজটি ডুবে গিয়েছিল পানিতে। তখনকার সময়ে খুব বেশি আলোচনা না হলেও পরবর্তীতে বইটি নিয়ে প্রচুর কথা ওঠে। উঠবে নাই বা কেন? হাজার হলেও ভবিষ্যত বলতে পারা বই ! কম কথা!
২. একই নামের ব্যাক্তি
টাইটানিক ছবিতে নায়কের নাম রাখা হয়েছিল জে. ডসন। অদ্ভূত শোনালেও সত্য যে, ছবির মতন সত্যিকারের টাইটানিক জাহাজটিতেও জে. ডসন নামের এক ব্যাক্তির খোঁজ পাওয়া যায়। এই জে. ডসনের ঘটনাই টাইটানিক ছবিতে উঠে এসেছে কিনা কিংবা বিষয়টি জেনে বুঝে করা হয়েছিল কিনা সেটা জানা সম্ভব না হলেও কাকতালীয় এই অদ্ভূত ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে টাইটানিকের বেলায়। তবে পুরো নামটা মিলে গেলেও সামান্য একটু তফাৎ রয়েই গিয়েছে দুই জে. ডসনের। জে এর মানে ছিল জেমস, জ্যাক নয়।
৩. ধ্বংস অনিবার্য
আমরা সবাই আহা-উহু করি এটা ভেবে যে, যদি সেই বরফের টুকরোটা টাইটানিকের সামনে না আসতো আর টাইটানিক ডুবে না যেত! বাস্তবে পানিতে ডুবে না হলেও টাইটানিককে ধ্বংস হতেই হতো। যতদূর জানা যায়, জাহাজ যাত্রা শুরুর পরের দিন থেকেই এর ভেতরে আগুন লেগে যায়। যদিও অনেকে বলে থাকেন সেই আগুন বরফ সংঘর্ষের আগের দিন নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছিল, বাকীরা সেটা মোটেও ভাবেন না। তাদের কথানুসারে, টাইটানিকের ভেতরে আগুন ধরে গিয়েছিল। যার ফলে এর ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী ছিল।